google.com, pub-2818299811453184, DIRECT, f08c47fec0942fa0

বীমা কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি [বিস্তারিত জানুন ২০২৪]

বীমা শব্দটি নিশ্চয়ই শুনেছেন। বীমাকে ইংরেজীতে ইন্সুরেন্স বলা হয়। ইন্সুরেন্স বা বীমা কাকে বলে, বীমা কত প্রকার এবং বীমা করার সুবিধা ও অসুবিধা কি এসব বিষয়ে নিয়ে আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

আপনি যদি বীমা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন এবং একটি বীমা করার চিন্তা করে থাকেন, তবে পোস্টটি আপনার জন্যই। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে বীমা কেন করতে হবে এবং বীমা করলে আপনার লাভ কি এসব বিষয়ে জানতে পারবেন। তো চলুন, ইন্সুরেন্স কাকে বলে সে বিষয়টি জেনে নিই।

বীমা কাকে বলে?

বীমা/ইন্সুরেন্স/Insurance হল একটি আর্থিক ব্যবস্থা যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি বা একটি প্রতিষ্ঠান অন্য একজন ব্যক্তি বা একটি প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ(প্রিমিয়াম) প্রদান করে এবং সেই অর্থের বিনিময়ে বীমাকারী প্রতিষ্ঠান সেই ব্যক্তি বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য ঝুঁকি গ্রহণ করে। বীমার মাধ্যমে ঝুঁকির সম্মুখীন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আর্থিক নিরাপত্তা অর্জন করে।

বীমার মূল উদ্দেশ্য হলো ক্ষতিপূরণ প্রদান করা। কোন দুর্ঘটনা, অগ্নিকাণ্ড, চুরি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদির ফলে বীমাকৃত সম্পত্তি বা ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বীমাকারী প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে। এছাড়াও, বীমা একজন ব্যক্তিকে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করে এবং তাকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করে তোলে।

উদাহরণস্বরূপ, মনে করুন একজন ব্যক্তি একটি প্রতিষ্ঠানে জীবন বীমা করেছে। এজন্য তিনি প্রতি মাসে বীমা প্রিমিয়াম প্রদান করে থাকেন উক্ত প্রতিষ্ঠানকে। কয়েক মাস পর বা কয়েক বছর পর যদি উক্ত ব্যক্তি কোনো অ্যাক্সিডেন্ট এ দুর্ঘটনার শিকার হয় বা মারা যায়, তাহলে উক্ত প্রতিষ্ঠান সেই ব্যক্তির উত্তরাধিকারদেরকে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ প্রদান করবে। এভাবে করেই বীমা একজন ব্যক্তিকে লাভবান করে থাকে।

এছাড়াও, যেকোনো প্রতিষ্ঠান চাইলে বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট নিজেদের প্রতিষ্ঠানের নামে বীমা করতে পারে। এতে করে, চুরি, অগ্নিকাণ্ড বা যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে উক্ত প্রতিষ্ঠানের যেকোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে বিমাকারী প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে।

বীমা কত প্রকার ও কি কি – Types of Insurance

বীমার ধরণ এর উপর নির্ভর করে বীমা কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। বীমা সাধারণত ৪ ধরনের হয়ে থাকে। এগুলো হচ্ছে – জীবন বীমা, সম্পত্তি বীমা, স্বাস্থ্য বীমা, যাতায়াত বীমা ইত্যাদি। এছাড়াও আরও কয়েক ধরনের বীমা রয়েছে। এসব বীমা আবার আরও কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। নিচে জীবন বীমা, সম্পত্তি বীমা, স্বাস্থ্য বীমা, এবং যাতায়াত বীমা কাকে বলে এসব বিষয় নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করে দিয়েছি।

জীবন বীমা কাকে বলে

জীবন বীমা হল একটি চুক্তি যা একজন ব্যক্তি ও একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পাদিত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে বীমা প্রতিষ্ঠান এই মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করে যে বীমাগ্রহীতার মৃত্যুর পর তার পরিবারকে বা তার উত্তরাধিকারকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করা হবে। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অনেক সময় মৃত্যু ছাড়াও বীমা গ্রহীতা ব্যক্তির মারাত্মক অসুখ হলেও বীমার অর্থ দিয়ে থাকে বীমা প্রতিষ্ঠান।

সম্পত্তি বীমা কাকে বলে

সম্পত্তি বীমা হল একটি চুক্তি যা একজন বীমাগ্রহীতা ও একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পাদিত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে বীমা প্রতিষ্ঠান এই মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করে যে বীমাগ্রহীর সম্পত্তির ক্ষতি হলে বীমা প্রতিষ্ঠান একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে। এই অর্থ বীমাগ্রহীতার সম্পত্তির ক্ষতি পূরণের জন্য ব্যবহৃত হবে। সম্পত্তি বীমার মাঝে আবার কয়েক ধরনের বীমা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে –

  • অগ্নি বীমা: এই বীমার মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের কারণে সম্পত্তির ক্ষতি হলে বীমা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিপূরণ প্রদান করে থাকে।
  • ভূমিকম্প বীমা: এই বীমার মাধ্যমে ভূমিকম্পের কারণে বিমাকারী ব্যক্তির সম্পত্তির ক্ষতি হলে বীমা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়।
  • আবহাওয়া বীমা: এই বীমার মাধ্যমে বন্যা, ঝড়, টর্নেডো ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সম্পত্তির ক্ষতি হলে বীমা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়।
  • চুরি বীমা: চুরির কারণে সম্পত্তির ক্ষতি হলে বীমা প্রতিষ্ঠান থেকে বিমাকারী ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়।
  • যানবাহন বীমা: এই বীমার মাধ্যমে যানবাহনের ক্ষতি হলে বীমা প্রতিষ্ঠান থেকে বিমাকারী ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়।

স্বাস্থ্য বীমা কাকে বলে

স্বাস্থ্য বীমা হল একটি চুক্তি যা একজন বীমাগ্রহীতা ও একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পাদিত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে বীমা প্রতিষ্ঠান এই মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করে যে বীমাগ্রহীর অসুস্থতা, দুর্ঘটনা বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার কারণে চিকিৎসার জন্য যা ব্যয় হবে, বীমা প্রতিষ্ঠান সেই ব্যায়ের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে। এই অর্থ বীমাগ্রহীর চিকিৎসা খরচ মেটানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।

যাতায়াত বীমা কাকে বলে

যাতায়াত বীমা হল একটি চুক্তি যা একজন বীমাগ্রহীতা ও একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পাদিত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে বীমা প্রতিষ্ঠান এই মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করে যে বীমাগ্রহীর যাত্রাকালীন কোন দুর্ঘটনা বা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে বীমা প্রতিষ্ঠান একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে। এই অর্থ বীমাগ্রহীর চিকিৎসা খরচ, মৃতদেহের প্রত্যাবর্তন খরচ, ক্ষতিগ্রস্ত সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ ইত্যাদির জন্য ব্যবহৃত হবে।

এগুলো ছাড়াও আরও কয়েক ধরনের বীমা রয়েছে। বীমা করার পূর্বে বীমার শর্ত দেখে নিতে হবে। এছাড়াও, বীমা প্রতিষ্ঠান যাচাই করার সময় অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। কারণ, অনেক বীমা কোম্পানি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফ্রড হয়ে থাকে। বীমা করার পর বীমা প্রিমিয়াম জমা দিতে হয়। তাই, আপনার বীমা প্রিমিয়াম নিয়ে পালিয়ে যাবে, যে কারণে বীমা করলেন সেটি পূরণ হবে না এমন পরিস্থতিতে পড়তে না চাইলে অবশ্যই বীমা কোম্পানি যাচাই করে নিতে হবে।

বীমা প্রিমিয়াম কি

বীমা প্রিমিয়াম হল বীমা গ্রহীতার কাছ থেকে বীমা কোম্পানী যে অর্থ গ্রহণ করে। এই অর্থ বীমা কোম্পানীকে বীমাকৃত ঝুঁকির বিপরীতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। বীমা করার সময় শর্ত অনুযায়ী বীমা প্রিমিয়াম প্রদান করতে হয়। সাধারণত প্রতি মাসে বীমা প্রিমিয়াম দিতে হয়। তবে, বীমা প্রিমিয়াম এর পরিমাণ নির্ভর করে থাকে বীমার ধরণ এবং মেয়াদের উপর।

বীমা প্রিমিয়াম কাকে বলে সেটি আরও সহজভাবে বললে, আপনি বীমা করার পর বীমা প্রতিষ্ঠান আপনার কাছে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা নিবে, এটাই হচ্ছে বীমা প্রিমিয়াম। এই টাকাগুলোই আপনার বীমার জন্য ব্যবহার করা হবে। অর্থাৎ, কোনো ক্ষতি হলে বীমা প্রতিষ্ঠান এই অর্থ থেকেই আপনাকে বীমা প্রদান করবে।

বাংলাদেশের সেরা বীমা কোম্পানি

বাংলাদেশে অনেকগুলো বীমা কোম্পানি রয়েছে। এর মাঝে অনেক বীমা কোম্পানির নামে গ্রাহকদের রিপোর্ট রয়েছে। তবে, বাংলাদেশে এমন কিছু বীমা কোম্পানি রয়েছে যেগুলো বিগত অনেক বছর যাবত সেবা দিয়ে আসছে। নিচে বাংলাদেশের সেরা বীমা কোম্পানির একটি তালিকা উল্লেখ করে দিয়েছি। 

আপনি যদি বীমা করতে চান, তবে এসব কোম্পানিতে বীমা করতে পারেন। তবে, বীমা করার পূর্বে অবশ্যই বীমা কোম্পানির শর্তসমূহ পড়ে নিবেন। এতে করে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। বীমা করার জন্য অবশ্যই রেপুটেড প্রতিষ্ঠানের কাছে করতে হবে। নয়তো বীমা প্রিমিয়াম নিয়ে বীমা প্রতিষ্ঠান পালিয়ে যাবে।

শেষ কথা

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে বীমা কি, বীমা কাকে বলে, বীমা কত প্রকার ও কি কি এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। যারা জানেন না যে ইন্সুরেন্স কাকে বলে এবং বীমা করার সুবিধা কী, আশা করছি তাদের কাছে পোস্টটি সহায়ক হবে। আরও এমন তথ্য জানতে প্রতিদিন আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

Check Also

রকেট একাউন্ট খোলার নিয়ম

রকেট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৪ (বোনাস ২৫ টাকা)

ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখাবিহীন মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস হচ্ছে রকেট। রকেট একাউন্ট খোলার নিয়ম অনেক সহজ এবং …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *