মনোরম পরিবেশ, উন্নত জীবনযাপন ও অসাধারণ সুযোগ-সুবিধার সমন্বয়ে কানাডা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। অভিবাসীদের কাছে এটি স্বপ্নের দেশ হিসেবে পরিচিত। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের জন্যও কানাডা অত্যন্ত জনপ্রিয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর অনেক দেশের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডাকেই প্রথম পছন্দ করে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরা কানাডা ভ্রমণপ্রিয় মানুষদের কাছেও অত্যন্ত আকর্ষণীয়। নায়াগ্রা জলপ্রপাত এবং ব্যানফ ন্যাশনাল পার্কের মতো বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলো সারা বিশ্ব থেকে পর্যটক আকর্ষণ করে। টরন্টো, কুইবেক, ভ্যানকুভার ইত্যাদি শহর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং অসাধারণ পরিবেশের জন্য বিখ্যাত।
আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাতে চলেছি কী করে এই অপরূপ সুন্দর দেশ কানাডাতে ভিজিট ভিসার প্রসেসিং করবেন।
কানাডার সরকারের বিভিন্ন ধরনের অভিবাসন কর্মসূচি রয়েছে। যেমন স্টুডেন্ট ভিসা,ওয়ার্ক ভিসা,পার্মানেন্ট রেসিডেন্স ভিসা,ভিজিট ভিসা ইত্যাদি।
কানাডার ভিজিট ভিসা
কানাডার ভিজিটর ভিসা, যা অস্থায়ী আবাসিক ভিসা নামেও পরিচিত, কানাডা ভ্রমণের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। ছুটি কাটানো, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়দের সাথে দেখা করা, ব্যবসায়িক মিটিংয়ে অংশগ্রহণ ইত্যাদি উদ্দেশ্যে আপনি যদি কানাডা যেতে চান, তাহলে এই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
যদিও ভিজিটর ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ, তবে ভিসা পাওয়া সবসময় একটু কঠিন হতে পারে। দূতাবাস কর্তৃপক্ষ আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য, আর্থিক সচ্ছলতা, দেশে ফেরার আগ্রহ ইত্যাদি বিষয়গুলি যাচাই করবে। সাক্ষাৎকারের সময় আপনাকে আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা, থাকার ব্যবস্থা, আর্থিক নথি ইত্যাদি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে হবে। দূতাবাস কর্মকর্তারা মনে করলে যে আপনি ভিসার মেয়াদ শেষে দেশে ফিরে আসবেন না, তাহলে আপনার ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে।
কানাডার ভিজিট ভিসার আবেদন করবেন যেভাবে।
১.কানাডার ভিজিট ভিসার আবেদন করতে অনলাইনে ভিসা ফর্মে আপনার নিজের বিভিন্ন তথ্য যেমন পেশাগত তথ্য, পূর্বের ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য, পরিবারের তথ্যসমূহ সঠিকভাবে দিতে হবে।
২. যদি এমন হয় যে আপনি প্রথমবারের মতো কানাডার ভিসার জন্য আবেদন করছেন তবে আপনাকে অবশ্যই বায়োমেট্রিক জমা দিতে হবে। বায়োমেট্রিক দেয়া কানাডার ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক। ছবি তোলা ও আঙ্গুলের ছাপ দেয়ার জন্য বাংলাদেশে কানাডা-র বায়োমেট্রিক পার্টনার ভিএফএস গ্লোবালের ঢাকা, সিলেট এবং চট্টগ্রামের অফিসের যেতে হবে।
৩. অনলাইনে আবেদনের পর সাধারণত ভিজিট ভিসার জন্য ১ থেকে ২ মাস সময় লাগতে পারে। সাধারণত কানাডার অভিবাসী ভিসার অনেক কঠিন রিকোয়ারমেন্ট থাকে যেগুলো ভিজিট ভিসার জন্য নেই।
৪. অনলাইনে আবেদনের পরে ভিসা এপ্রুভ হলে আপনি আপনার ইমেইলেই নোটিফিকেশন পাবেন। তাই শুরুতেই আপনার সচল ইমেইল দিয়ে কানাডার ভিজিট ভিসার অ্যাপ্লিকেশন করুন। এপ্রুভাল নোটিফিকেশন পাওয়ার পরে ভিসা অ্যাপ্রুভাল লেটারসহ ভিএফএস গ্লোবালে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে।জমা দেয়ার ১০ দিন পর ভিসা সহ পাসপোর্ট ফেরত পাবেন।সাধারণত কানাডাতে ভিজিট ভিসা সাধারণত ১০ বছরের জন্য ইস্যু করা হয়।
সাধারণত, বিভিন্ন দেশের বেশিরভাগ বিদেশিকে কানাডার সরকারের ওয়েবসাইট থেকে অবশ্যই একটি ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন (ইটিএ) সংগ্রহ করতে হয় যেটা আপনিওঅনলাইনে আবেদন করার পর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে পেতে পারেন।
কানাডার ভিজিট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে যা প্রধানত দেখাতে হবে:
১.ভিজিটের পুরো সময়জুড়ে আপনার ব্যয় নির্বাহ করার সক্ষমতা আছে কিনা।
২.নির্দিষ্ট সময় শেষে কানাডা ত্যাগ করার নিশ্চয়তা
কানাডায় ভিজিট ভিসার জন্য যেসব যোগ্যতা লাগে
কানাডা ভিজিট ভিসা পাওয়ার জন্য ভিসা প্রার্থীর পূর্বে থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ভ্রমণ থাকলে ভালো। এসবের পাশাপাশি আপনার পেশাগত, সামাজিক এবং পারিবারিক যোগ্যতা ভালো থাকতে হবে। আর একজন আবেদনকারীকে তার অর্থনৈতিক সক্ষমতা প্রমাণ করা বাধ্যতামূলক। এজন্য ভিজিট ভিসা প্রার্থীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নিয়মিত লেনদেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কানাডা মূলত শীত প্রধান দেশ। সাধারণত বছরের একটা বড় সময়ই তাই ঠান্ডা এবং বরফে ঢাকা থাকে। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত কানাডা ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। এ সময়ে ভ্রমণে গেলে শীতকালীন অ্যাক্টিভিটির পাশাপাশি আরো অনেককিছু উপভোগ করতে পারবেন। কানাডা ভিজিট ভিসার আবেদন যেহেতু সময়সাপেক্ষ তাই কানাডা ঘুরতে যেতে চাইলে প্রস্তুতি শুরু করুন চার-পাঁচ মাস আগে থেকেই!