ফাইবার কি? Fiverr এ কি কি কাজ পাওয়া যায়

ফাইবার হলো একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেখানে মানুষ কোনো কাজের জন্য অন্য মানুষকে ভাড়া করে থাকে কিংবা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কাজ করিয়ে নেয়। আপনি যদি অনলাইনে কোনো কাজে দক্ষ থাকেন তাহলে Fiverr.com এ জয়েন করে কাজ করার মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন। আমাদের আজকের বিষয় হলোঃ ফাইবার কি, Fiverr এ কি কি কাজ পাওয়া যায় এবং কিভাবে সেখানে একাউন্ট খুলে কাজ করতে হয়।

তো চলুন বিস্তারিত জেনে নিই-

ফাইবার কি?

ফাইবার হলো একটি জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস। মার্কেটপ্লেস বলতে বুঝায় ক্রয় বিক্রয় করার স্থান। ফাইবার মার্কেটপ্লেস-এ যেকোনো সেবা বা সার্ভিস ক্রয়-বিক্রয় করা যায়।

আমরা সাধারনত ক্রয় করা বলতে কোনো পণ্য ক্রয় করাকে বুঝে থাকি। কিন্তু, সেবা বা সার্ভিসও যে ক্রয়-বিক্রয় করা যায় তা আমরা অনেকেই জানি না।

মনে করুন, আপনার জ্বর হয়েছে। তাহলে এখন আপনি কি করবেন?

অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন। এবং ডাক্তার দেখানোর জন্য ডাক্তারকে আপনার টাকা দিতে হবে। এই যে ডাক্তার রোগী দেখার বিনিময়ে অর্থ নিচ্ছে এটি হলো সার্ভিস বা সেবা বিক্রয়ের একটি উদাহরণ।

ঠিক তেমনই আপনি যদি এখানে ডাক্তারের মতো অনলাইনের কোনো বিষয়ে অনেক দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে ফাইবারের মতো মার্কেটপ্লেসে আপনার সার্ভিস বা সেবা বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারবেন। অথবা আপনার যদি কোনো সার্ভিসের প্রয়োজন হয় তখনও ফাইবার থেকেই সেই সার্ভিসটি করিয়ে নিতে পারবেন।

ফাইবার মার্কেটপ্লেসঃ

অনলাইনে অনেক ধরনের মার্কেটপ্লেস আছে । এর মধ্যে Freelancer, এবং Upwork অন্যতম। ফাইবার এদের মতোই একটি মার্কেটপ্লেস এখানে যে কেউ চাইলেই একাউন্ট খুলে কাজ করতে পারে। নতুনদের জন্য ফাইবার একটি আশার আলো বলতে পারেন। আপনি যদি একদম নতুন ফ্রিলান্সার হয়ে থাকেন এবং অনলাইন থেকে আয় করতে চান তাহলে Freelancer কিংবা Upwork আপনার জন্য যথাযথ হবে না।

কেননা সেখানে অপেক্ষাকৃত প্রতিযোগীতা একটু বেশি। কিন্তু ফাইবার মার্কেটপ্লেসে প্রতিযোগীর সংখ্যা কম। তাছাড়া, যেহেতু এখানে সাশ্রয়ী মূল্যে সকল সার্ভিস পাওয়া যায়, তাই এখানে বায়ারের সংখ্যাও অনেক বেশি। তাই নতুনদের জন্য ফাইবার দিয়েই ফ্রিলান্সিং ক্যারিয়ার গড়া যুক্তিসংগত বলে আমি মনে করি।

কেন ফাইবার?

ফাইবার মার্কেটপ্লেসে ফ্রিলান্সার বা আপওয়ার্কের এর মতো কনটেস্ট ও বিড করতে হয় না। সেলাররা এখানে তাদের সার্ভিস স্বমন্ধে উল্লেখ করে সাজিয়ে রাখে। যাকে ফাইবারের ভাষায় বলা হয় Gig. এবং কোনো বায়ার কোনো সার্ভিসের জন্য অনুসন্ধান করলে সেই গিগগুলো প্রদর্শিত হয়। এবং গিগ পছন্দ হলে বায়ার ঐ সেলারের সার্ভিসটি ক্রয় করে নেয়।

তাছাড়া এখানে বায়ার রিকোয়েস্টের মাধ্যমেও কাজ পাওয়া যায়। বায়ার রিকোয়েস্ট বলতে বুঝায়, আপনার যদি কোনো সার্ভিসের প্রয়োজন হয় তাহলে লিখে পোস্ট করতে পারবেন এবং সেখানে যারা সার্ভিস সেল করে তারা আপনাকে অফার করতে পারবে। সেখান থেকে যার অফার আপনার বেশি পছন্দ হয় তাকে দিয়ে কাজটি করিয়ে নিতে পারবেন।

তাছাড়া, বায়াররা এখানে কাজশেষে সেলারদের রেটিং বা রিভিউ দিতে পারে। এবং পরবর্তীতে যখন অন্য কোনো বায়ারের সার্ভিসের প্রয়োজন পরে তাহলে এসব রিভিউ দেখে কাজের কোয়ালিটি সম্পর্কে আইডিয়া নিতে পারে। এবং যেই সেলারের একাউন্টে ভালো রিভিউ আছে তাদের দিয়ে কোয়ালিটি সম্পূর্ন কাজ করিয়ে নিতে পারে।

প্রতিদিন হাজার হাজার বায়ার ফাইবার মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে তাদের কাজগুলো করিয়ে নিচ্ছে। আপনার যদি ভালো কাজের দক্ষতা থাকে এবং একাউন্টে কিছু ভালো রিভিউ জমাতে পারেন তাহলে এই ফাইবার-ই হতে পারে আপনার ক্যারিয়ার।

ফাইবার কিভাবে কাজ করে?

ফাইবার মূলত সেলারের সার্ভিসগুলো বায়ারের কাছে পৌছে দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এবং এক্ষেত্রে বায়ার এবং সেলার উভয়ের কাছ থেকেই ফাইবার লাভ করে।

এখানে যারা সেলার তারা নিজেদের সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করে পোস্ট করে, যাকে ফাইবারের ভাষায় বলা হয় গিগ। এবং যারা বায়ার (সার্ভিস ক্রয় করে) তারা গিগগুলো থেকে পছন্দমতো একটি বাছাই করতে পারে।

গিগ বাছাই করার পর উল্লেখিত অর্থ ফাইবারে জমা দিবে এবং সেলার তার কাজটি সম্পন্ন করে বায়ারের কাছে জমা দিলে ফাইবার টাকাটি সেলারের একাউন্টে ডুকিয়ে দিবে। তারপর সেখান থেকে পেপাল বা পেওনার কার্ডের মাধ্যমে সেলার নিজের ব্যাংক একাউন্টে নিয়ে আসতে পারবে।

এখানে জেনে রাখা ভালোঃ বায়ার(Buyer ) হলো তিনি , যিনি কিছু কিনতে চায়। আর সেলার(Seller) হলো তিনি, যিনি কিছু বিক্রি করতে চায়।

এভাবেই ফাইবার এ বেচাকেনা সম্পূর্ন হয়। আপনার যদি কোনো অনলাইন সার্ভিস থাকে এথবা কোনো সার্ভিসের প্রয়োজন হয় তাহলে আপনি ফাইবারে একাউন্ট খুলে সেখান থেকে সুবিধা পেতে পারেন।

Fiverr এ কি কি কাজ পাওয়া যায়?

ফাইবার কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে এ স্বমন্ধে আমরা খুব ভালো ভাবে জেনে নিলাম। এবার চলুন জেনে নিই যে Fiverr এ কি কি কাজ পাওয়া যায় এই সম্পর্কে।

ফাইবারে আসলে অনেক ধরনের কাজই পাওয়া যায়। আপনার যেকোনো অনলাইন কাজের দক্ষতা থাকলেই আপনি ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারবেন। আমি কয়েকটি কাজের উদাহরন দিচ্ছি, এর মধ্যে যে কাজটি আপনার পছন্দ হয় সে কাজের দক্ষতা বাড়ানো শুরু করে দিন।

ফাইবারে কোন কাজের চাহিদা বেশি? নতুনদের জন্য জানা একদম আবশ্যক।

ফাইবারের সাধারণত অনেক ধরণের কাজ  থাকে। তার মধ্যে যে কাজ গুলো বেশী থাকে সেগুলো হলোঃ

Virtual Assistant

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হচ্ছে এমন একটি সেবা যেখানে আপনি ঘরে বসে কম্পিউটার এর মাধ্যমে অনলাইনে সারা বিশ্বে যেকোনো কোম্পানি কে সাহায্য সহযোগীতা করতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনাকে কম্পিউটারের সঠিক ব্যবহার এবং ইংলিশে কথা বলা জানতে হবে।

Transcription

ট্রান্সক্রিপশন হলো আপনাকে একটি ছবি বা ভিডিও দেওয়া হবে এবং সেই ছবির মধ্যে থাকা লেখাগুলো বা ভিডিও-এর মধ্যে থাকা কথাগুলো আপনাকে টেক্সট আকারে লিখে দিতে হবে। এটি খুব সহজ একটি কাজ যেটি করে আপনি মাসে ১০০-২০০ ডলার খুব সহজেই আয় করতে পারেন।

Translation

যেকোনো লেখার অনুবাদ করাকে প্রধানত ট্রান্সলেশন বলা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে, যেকোনো একটি দেশের ভাষাকে অন্য কোনো দেশের ভাষায় পরিবর্তন করে দেওয়া লাগতে পারেন। যেমন বাংলা ভাষা থেকে ইংরেজী ভাষা, হিন্দি ভাষা থেকে ইংরেজী ভাষা ইত্যাদি।

Video Editing

অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ভিডিও এডিট করে দেওয়ার মাধ্যমেও ইনকাম করা যায়। এক্ষেত্রে Adobe premiere pro বা Filmora দিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারলেই আপনি ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারবেন। তাছাড়া ভিডিও এডিটিং এর মধ্যে রয়েছে Short video ads, spokespersons video editing, visual effect সহ নানা ধরনের কাজ।

মনে রাখবেন, ভালো ভিডিও ইডিটরের ভবিষ্যত জীবন উজ্জ্বল। আর কেবল মাত্র ফাইবারে নয়, সারা পৃথিবীতে এই ভিডিও ইডিটরের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

Article/content writing

অনলাইন মার্কেটপ্লেসে content writing খুব জনপ্রিয় একটি কাজ । আপনি যদি ইংরেজীতে অনেক পারদর্শী হন তাহলে ইংরেজীতে কন্টেন্ট লেখার মাধ্যমে ফাইবার থেকে অনেক ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।

content writing এর চাহিদা অনেক বেশি। দিন দিন এর চাহিদা আরো বেড়েই চলেছে। ১০০০ হাজার শব্দের একটি আর্টিকাল লেখার জন্য অনেকে সর্বনিন্ম ২০ ডলার চার্জ করে থাকে। বুঝতেই পারছেন, যেখানে কিনা বাংলাদেশে ১০০০ শব্দের একটি রচনা লিখে দিলে কেউ ১০০ টাকাও দিবে না সেখানে অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে ১০০০ শব্দের একটি আর্টিকাল লিখে দেওয়ার জন্য ২০ ডলার তথা ১৬০০ টাকা দিয়ে থাকে।

তাছাড়া, আপনি যদি আমেরিকান নেটিভ কাউকে দিয়ে কন্টেন্ট রাইটিং করিয়ে নিতে চান তাহলে ১০০০ শব্দের জন্য ১০০ ডলার গুনতে হতে পারে। এখন বুঝতেই পারছেন কন্টেন্ট রাইটের কত মূল্য।

SEO optimization

এসইও এর পূর্নরূপ হলো সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন। আপনি যদি সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন করে কোনো পেইজকে গুগলের প্রথমে নিয়ে আশার কাজ জানেন তাহলে কেবল মাত্র ফাইবার থেকেই আপনি মাসে সর্বনিন্ম ২০০০ ডলার ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমান পৃথিবীতে এর মূল্য অনেক বেশি। বড় বড় কম্পানিগুলো তাদের ওয়েবসাইটকে গুগলের এক নম্বরে নিয়ে আশার জন্য টাকার দিয়ে নজর দেয় না। তারা এসইও এর পিছনে অনেক টাকা ব্যয় করে থাকে।

Digital Marketing

মার্কেটিং বলতে বুঝায় কোনো একটি প্রোডাক্ট বিক্রয় করার জন্য এর প্রচার করা। একটি প্রোডাক্ট অনেক ভাবেই মার্কেটিং করা যায়। যেমন: social media marketing, SEO, content marketing(guest-post), Podcast marketing, E-mail marketing ইত্যাদি।

তো, আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এর যেকোনো সেক্টরে খুব বেশি দক্ষ হোন তাহলে বিভিন্ন কম্পানি বিভিন্ন প্রোডাক্ট প্রচার করার মাধ্যমে ফাইবার থেকে উপার্জন করতে পারবেন। যদি আপনার সার্ভিস সত্যিই খুব ভালো হয়ে থাকে তাহলে সেখান থেকে পরবর্তীতে তাদের কম্পানিতে পার্মানেন্ট জব পেয়ে যেতে পারেন।

Programming

প্রোগ্রামিং বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমনঃ আপনি প্রোগ্রামিং করে একটি ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন, মোবাইল এপ্লিকেশন বানাতে পারবেন, কোনো সফটওয়ার বানাতে পারবেন কিংবা কোনো রোবট বানাতে পারবেন। কিন্তু আমাদের দেখে প্রোগ্রামিং বলতে ওয়েব ডিজাইন কিংবা ওয়েব ডেভেলোপমেন্টকেই বুঝানো হয়ে থাকে।

যাই হোক, প্রোগ্রামিং টা তুলনামূলক একটু কঠিন কাজ। খুব বেশি দক্ষ না হলে এই কাজটি করা যায় না। আর প্রোগ্রামিং শিখার জন্য আপনাকে অনেক সময় নিয়ে লেখাপড়া করতে হবে।

কিন্তু এই কাজের চাহিদা অনেক বেশি। আপনি যদি এই কাজে অনেক দক্ষ হতে পারেন তাহলে ২ দিন কাজ করে ১০০০ ডলার ইনকাম করে ফেলতে পারবেন।

প্রোগ্রামিং এর কাজের মূল্য অনেক বেশি। একটি প্রোজেক্টের জন্য একজন প্রোগ্রামার সর্বনিন্ম ১০০০ ডলার থেকে ৫,০০০ ডলার বা তার বেশি এমাউন্ট চার্জ করতে পারে।

একজন বড় মানের প্রোগ্রামার একটি প্রোজেক্টের জন্য ৫০,০০০-১,০০,০০০ ডলার পর্যন্ত চার্জ করে থাকে। তো বুঝতেই পারছেন এর চাহিদা কেমন! এমনকি ফাইবার মার্কেটপ্লেসেও এর অনেক চাহিদা রয়েছে।

Graphics design

গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্যও রয়েছে অনলাইনে বিরাট সুযোগ। আপনি যদি ভালো ডিজাইন তথা Logo design, Business card design, Postcard design, flyers design, Banner desing ইত্যাদি বিষয়ে খুব বেশি পারদর্শী হোন তাহলে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে একটি পরিষ্কার ভবিষ্যত।

ফাইবার একাউন্ট খুলার নিয়ম

ফাইবারে কাজ করতে হলে প্রথমে একটি এক্যাউন্ট ওপেন করতে হবে। কিভাবে ফাইবার একাউন্ট খুলতে হয় তার নিয়ম যথাযথভাবে নিচে দেখানো হলো।

বি.দ্রঃ কেউ যদি নিচের লিংক-এর মধ্যে ক্লিক করে ফাইবারে একাউন্ট খুলেন তাহলে আপনি সর্বোচ্চ ১০০ ডলার বোনাস পাবেন, যা পরবর্তীতে পেওনার একাউন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংকে নিয়ে আসতে পারবেন।

ফাইবার একাউন্ট খুলার জন্য এখানে ক্লিক করুন – fiverr.com

এখানে ক্লিক করার পর সরাসরি ফাইবারে চলে যাবেন এবং সেখান থেকে আপনাকে উপরে ডানপাশে Join বাটনে ক্লিক করতে হবে।

লক্ষ করুন-

ফাইবারের মূল পেইজ
ফাইবারের মূল পেইজ

এখান থেকে Join এ ক্লিক করার পর সাইন-আপ করার ৩ টা অপশন আসবে। নিচের ছবিটি লক্ষ করুন

Screenshot 2020 12 20 Login to Fiverr 1
ফাইবার কি? Fiverr এ কি কি কাজ পাওয়া যায় 4

আমরা চাইলে ৩টি মাধ্যমে একাউন্ট খুলতে পারি। তবে সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো গুগল দিয়ে একাউন্ট খুলা।
[বিঃদ্রঃ একটি ডিভাইস দিয়ে একটি একাউন্ট খুলতে হয়, বেশি খুললে একাউন্ট বাতিল হয়ে যায়]

কন্টিনিউ উইথ গুগল এ ক্লিক করবো।

এরপর আমার যেই ইমেইল একাউন্ট দিয়ে ফাইবার একাউন্ট খোলতে চাই সেই ইমেইল একাউন্টটি সিলেক্ট করে দেবো।

ফাইবার থেকে আপনাদের জিমেইলে একটি ভেরিভিকেশন মেইল দিবে। এবং সেখানে একটি লিংক থাকবে । সেই লিংককে ক্লিক করে আপনাদের ফাইবার একাউন্টটি ভেরিফাইড করে নিবেন।

সেই সাথে ফোন নম্বর দিয়েও ভেরিফাইড করে নিতে হবে।

তারপরে আমাদের একটি ইউজার নাম ও পাসওয়ার্ড দিতে হবে। পাসওয়ার্ড টি অবশ্যই স্ট্রং পাসওয়ার্ড হতে হবে। আপনি কি সার্ভিস প্রোভাইড করবেন সেই ক্ষেত্রে ওই কেটাগরি সিলেক্ট করে দিবেন।

[বি.দ্রঃ ইউজার নেইম আপনার প্রোফাইলে পদর্শিত হবে । এবং এটি আর পরিবর্তন করতে পারবেন না]

তারপর আপনি যে যে ভাষায় কথা বলতে পারদর্শী তা সিলেক্ট করে দিতে পারবেন।

এভভাবেই আপনি আপনার ফাইভের একাউন্ট ওপেন করতে পারবেন। এতি খুব সহজ একটি কাজ। আমি মনে করি, আপনি যদি ফাইবারে একটি একাউন্টই খুলতে না পারেন, তাহলে এখন আপনার ফাইবারে আসা উচিত হবে না।

কেনো ফাইবার একাউন্ট খুলবেন?

ফাইবার হলো একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেখানে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার সার্ভিস বিক্রি করা হচ্ছে। আপনার যদি অনলাইনে কোনো সার্ভিস থাকে তাহলে আপনি ফাইবারে একাউন্ট খুলে সেখানে আপনার সার্ভিস বিক্রি করতে পারেন।

যেমন ধরুন, আপনার একটি অনলাইন সার্ভিস রয়েছে। মনে করুন, আপনি অনলাইনে আর্টিকাল লিখার সার্ভিস প্রোভাইড করে থাকেন বা করতে চাচ্ছেন।

কিন্তু, আপনার কাছে যদি কোনো ক্রেতা বা ক্লায়েন্ট না থাকে তাহলে তাহলে কার কাছে আপনার আর্টিকাল বিক্রি করবেন? তাই প্রথমে আপনাকে আপনার সার্ভিসের ক্লায়েন্ট খুজে বের করতে হবে। আর, অনলাইনে ক্লায়েন্ট খুজার জন্য আপনাকে যেতে হবে যেকোনো অনলাইন মার্কেটপ্লেসে।

এখানেই শেষ নয়।

অনেক ধরনের মার্কেটপ্লেসই আছে। যেমনঃ

  • freelancer.com
  • upwork.com
  • peopleperhour.com

কিন্তু সকল মার্কেটপ্লেস থেকে ফাইভাবে কাজ বিক্রি করে অপেক্ষাকিত সহজ। তাই আপনার ফাইভাবে একাউন্ট খুলা উচিত।

ফাইবার কাদের জন্য?

যাদের অনলাইনে কিছু না কিছু করার দক্ষতা আছে এবং ভাবছেন অন্য মানুষদের সেসব দক্ষতার উপর কাজ করে দিয়ে অর্থ উপার্জন করবে, তাহলে ফাইবার হচ্ছে তাদের জন্য।

অনলাইনের অনেক প্রকার সার্ভিস রয়েছে, আপনি চাইলে সার্ভিসগুলোর বিষয়ে পড়াশোনা করে দক্ষ হয়ে আপনিও সার্ভিসগুলো প্রভাইড করতে পারেন।

যেমনঃ অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনের একটি সার্ভিস রয়েছে । তো যারা গ্রাফিক্স ডিজাইন পারে তারা ফাইবারে কাস্টমারদের গ্রাফিক্স ডিজাইন করে দিয়ে অনেক টাকা আয় করছে। তো আপনি চাইলে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ শিখে ফাইবারের মাধ্যমে কাজ করে আয় করতে পারেন।

গ্রাফিক্স ডিজাইন ছাড়াও অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে হাজারো রকমের সার্ভিস রয়েছে । ফাইবারে একাউন্ট খুলার পরই আপনি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। তো মূলত যারা ফ্রিলান্সিং করতে চায় বা করে ফাইবার তাদের জন্যই।

অনলাইনে কোনো সার্ভিস থাকলেই কি আমি ফাইবারে কাজ করতে পারবো?

অনলাইনে কোনো সার্ভিস থাকলেই কি আমি ফাইবারে কাজ করতে পারবেন কি না তা নির্ভর করে আপনার কাজের দক্ষতার উপর। এমন অনেকেই আছে যাদের অনলাইনে খুব কম পরিমাণের সার্ভিস রয়েছে কিন্তু সেখান থেকে অনেক উপার্জন করছে আবার অনেকে আছে যাদের অনেক অনেক সার্ভিস থাকার শর্তেও ইনকাম হচ্ছে না।

যেহেতু আপনার আগে ফাইবারে সারা বিশ্ব থেকে অনেক অনেক মানুষ কাজ করছে সেহেতু কমপিটিশন করে কাজ পেতে আপনাকে একটু যুদ্ধ করতেই হবে। কিন্তু, আপনার সার্ভিস্টি যদি ভালো হয় তাহলে খুব সহজেই ফাইবারের মাধ্যমে আপনি আপনার ক্যারিয়ার দাড় করাতে পারেন।

Fiverr এ কাজ পাওয়ার উপায় কি?

অনেক মানুষ আছে যাদের ভালো কাজের দক্ষতা থাকার শর্তেও ফাইবারে কোনো কাজ পায় না। কারন তারা ফাইবারে কাজ করার সঠিক নিয়মটি জানে না।

ফাইবারে কোনো বায়ার যদি কোনো কিছু লিখে সার্চ করে তাহলে সেখানে অনেক অনেক রেজাল্ট দেখায়। মূলত প্রথম দিকে যেই রেজাল্টগুলো থাকে তারাই অধিক পরিমানে কাজ পেয়ে থাকে।

আপনিও যদি ফাইবারে কাজ পাওয়ার উপায় সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে দেখে নিন Fiverr এ কাজ পাওয়ার কয়েকটি উপায়

  1. সুন্দর করে একটি গিগ সাজাতে হবে।
  2. গিগের টাইটেলের মধ্যে মেইন কি-ওয়ার্ড দিতে হবে যেন এটি লিখে কেউ সার্চ করলে আপনার গিগটি প্রদর্শিত হয়।
  3. মেটা ডিস্ক্রক্রিপশনে মেইন কি-ওয়ার্ড দিতে হবে ২-৩ বার।
  4. আকর্ষনীয় একটি গিগ ফটো দিতে হবে।
  5. গিগ ফটোর ফাইলের নামের মধ্যে মেইন কি-ওয়ার্ড রাখতে হবে।
  6. গিগ প্রকাশ করার সাথে সাথে যত জায়গার সম্ভব তা শেয়ার করে দিতে হবে।
  7. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয় হলো গিগ পাবলিশ করার পর থেকে আপনাদের এক্টিব থাকতে হবে।
  8. আপনি যদি গিগ বানিয়ে ফেলে রেখে দেন এবং সাপ্তাহে ৩-৪ দিন ফাইবারে ২-৩ ঘন্টার জন্য সক্রিয় থাকেন তাহলে আপনি কাজ পাবেন না। বরং প্রতিদিন এক্টিব থাকতে হবে।
  9. যে যত বেশি এক্টিব থাকে তার গিগ তত প্রথম দিকে থাকে এবং বেশি পরিমানে অর্ডায় পায়।
  10. কাজ পেয়ে গেলে কোয়ালিটি বজাই রেখে কাজ করা যেন ৫ স্টার রিভিও পান।

উপরের উপায়গুলো অনুসরন করে গিগ পাব্লিশ করলে আপনি অবশ্যই ফাইবারে কাজ পাবেন বলে আশা করি।

সর্বশেষ কথাঃ

ফাইবার কি এবং কিভাবে ফাইবারে একাউন্ট খুলে বিভিন্ন কাজ করে আয় করা যায় তা আপনারা ইতিমধ্যে জেনে গেছে। আমরা আমাদের পোস্টে এভাবেই আপনাকে সহায়তা করবো, এবং আপনারা আপনাদের সকল প্রশ্ন এবং মতামত কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। তাছাড়া আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন হয়ে আমাদের সাথে জড়িত থাকতে পারেন।

FAQs

কীভাবে আমি দ্রুত ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কাজ পাবো?

ফাইবারে অর্ডার পাওয়ার ২ মাধ্যম রয়েছে।
১।সরাসরি বায়ার এসে আপনাকে হায়ার করতে পারে।
২।বায়ার রিকোয়েস্ট থেকে আপনি অর্ডার পেতে পারেন

তাই দ্রুত কাজ পেতে চাইলে ভালো করে ভালো করে প্রোফাইল সাজান, গিগ অপ্টিমাইজ করুন এবং বায়ার রিকোয়েষ্টে বেশি বেশি অফার করুন।

কিভাবে আমি আমার ফাইবার গিগে বেশি সেল আনতে পারি?

বেশি সেল জেনারেট করায় মার্কেটিং-এর বিকল্প কিছুই নেই। আপনার গিগটি ভালোভাবে এসইও এর নিয়মানুসারে অপ্টিমাইজ করুন এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মার্কেটিং করুন। তাছাড়া বায়ার রিকোয়েস্টে অফার করে আপনি সেল আনতে পারবেন। ফাইবার গিগে বেশি সেল আপনে পারার আরো কিছু উপায় হচ্ছে বেশি বেশি এক্টিভ থাকা (এক্ষেত্রে আপনি আপনার মোবাইলে ফাইবার ইন্সটল করে নিতে পারেন), দ্রুত মেসেজের রিপ্লাই দেওয়া এবং সঠিক সময়ে কাজ জমা দেওয়া।

কেন আমার ফাইবার গিগ রেংক-এ আসে না?

ফাইবার গিগ রেংক-এ না আসার বিভিন্ন কারন থাকতে পারে। যেমনঃ এক্টিভ না থাকা, ভালো করে গিগ না সাজানো, বায়ার মেসেজ দিলে দেরি করে রিপ্লাই দেওয়া, গিগের টাইটেলে মেইন কি-ওয়ার্ড ব্যবহার না করা, গিগ ডিস্ক্রিপশনে মেইন কি-ওয়ার্ড ব্যবহার না করা বা অতিরিক্ত ব্যবহার করা, ইম্প্রেসিভ ইমেইজ ব্যবহার না করা ইত্যাদি।
এসকল বিষয়গুলো পরিহার করলে আপনার গিগ রেংক-কে আসবে।

কোনো গিগ ক্রিয়েট না করে শুধু ফাইবার একাউন্ট খোলা রাখলে কোনো সমস্যা কি হবে?

না কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু গিগ পাবলিশ করে যদি এক্টিভ না থাকেন তাহলে সেই গিগগুলো রেংকে অনেক পেছনে পরে থাকবে।
পরবর্তীতে গিগগুলো রেংক করানো কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তখন আবার নতুন করে গিগ ক্রিয়েট করতে পারবেন।

ফাইবার গিগ তৈরি করে কি করতে হবে?

যত জায়গার সম্ভব তা শেয়ার করে দিতে হবে। এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বায়ার খুজতে হবে এবং তাদেরকে লিংক শেয়ার করে আপনার গিগে নিয়ে আসতে হবে।

Avatar of Shakib Hasan

Blogger and SEO Expert. Founder of Techbdtricks. I always try to explore something new and let the people know about that. Keep me in your prayers.

14 thoughts on “ফাইবার কি? Fiverr এ কি কি কাজ পাওয়া যায়”

    • ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামত জানানোর জন্য

      Reply
    • হ্যা, মোবাইল দিয়ে ফাইবার এ কাজ করা যাবে।

      আপনি চাইলে Google Play store থেকে ফাইবার অ্যাপ্লিকেশান নামিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন।
      ফ্রিল্যান্সিং এর অনেক কাজ এখন মোবাইলে করা যায়।
      উদাহরনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং, কন্টেন্ট রাইটিং, ট্রান্সলেশন, ইত্যাদি।

      Reply
  1. আপনার ফাইবার বিষয়ে কথা গুলো খুব ভাল গেছে। আমি ফাইবার এ কাজ শিখতে চাই,,কোথায় থেকে কাজ শিখা যায়,, আমার ইনকাম এর দরকার নাই, আমি নিজে কাজে দক্ষতা অর্জন করতে চাই,, তারপর ইনকাম অবশ্যই হবে,,,
    ধন্যবাদ

    Reply
    • সঠিক সিদ্ধান্ত। আগে যে বিষয়ে আপনার আগ্রহ আছে সে বিষয়ে ভালোভাবে দক্ষতা অর্জন করুন। সেটা করতে পারেন, ইউটিউব/গুগল থেকে কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে। তারপর মার্কেটপ্লেসে গেলে আপনার কাজের কোনো অভাব হবে না আশা করি।

      Reply
  2. পড়াশোনা করে যা বুঝলাম, অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হলে প্রচুর পরিমানে ডেডিকেটেড হতে হবে তবেই সফল হওয়া সম্ভব, আমি মনে করি।

    Reply
    • এটার মানে হচ্ছে, ফাইবার আপনার সেলার একাউন্টটিকে এপ্রোভ করেনি।
      এটি হতে পারে আপনার অন্য আরেকটি একাউন্ট আছে যা এই ডিভাইস দিয়ে খোলা হয়েছিল সে কারনে।
      অথবা, সেলার একাউন্ট খোলার সময় সকল ইনফরমেশন সঠিকভাবে না দেওয়ার কারনে। সেক্ষেত্রে, ফাইবারে অন্য সেলারদের প্রোফাইল থেকে আইডিয়া নিয়ে নিজের প্রোফাইলে সঠিকভাবে ইনফরমেশন দিয়ে এপ্লাই করুন।

      Reply

Leave a Comment