কোনো কারনে কারো শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে কি করা উচিত?

কোনো কারনে কারো শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে এমন জরুরী অবস্থায় সে ব্যক্তির মুখ বা নাক দিয়ে যান্ত্রিক ছন্দময় প্রক্রিয়ার বাতাশ ডুকিয়ে এবং বের করে পুনরায় শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহন ও ত্যাগে সক্ষম করে তুলতে হবে। একে সাধারনত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস বলা হয়ে থাকে।

কখন কোন বিপদ চলে আসে তা বলা যায় না, তাই কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা সবারই জেনে রাখা ভালো। তাই যদি কেউ যদি কোনো বিপদের সম্মুখীন হয় তাহলে কাউকে এম্বুলেন্সকে খবর দিতে বলে রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। তো আজকে, আমি বলবো, কারো শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে এর প্রাথমিক চিকিৎসা কি হতে পারে, এ সম্পর্কে।

শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারন

নানা কারনে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যেমনঃ পানিতে ডুবে গেলে, কোনো কারনে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিলে, বৈদ্যুতিক শক খেলে, বিষপান কিংবা গ্যাস গ্রহন করলে শ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সময়মতো সাহায্য পেলে একটি জীবন বেচে যেতে পারে। তাই যে কারনেই শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাক না কেনো শিশু কিংবা কিশোরকে বাচাতে হলে একটি নিরাপদ জায়গায় নিয়ে দ্রুত মুখ থেকে মুখ অর্থাৎ কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে করণীয়

অজ্ঞান হয়ে জাওয়ার সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধকে গুলিয়ে ফেললে হবে না। একারনের প্রথমে দেখতে হবে বুকের উঠানামা বা কফের লক্ষন আছে কিনা আর যদি না থাকে তাহলে ধাপে ধাপে মুখ থেকে মুখ অর্থাৎ কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে হবে । ধাপগুলো নিচে দেওয়া হলোঃ

ধাপ-১ঃ চিৎকার করে কাউকে এম্বুলেন্স বা ডাক্তার ডাকার অনুরোধ করতে হবে।

ধাপ-২ঃ ব্যক্তির জিহ্বা সামনের দিকে টেনে দেখতে হবে মুখ-তালু-গলায় কিছু আটকে আছে কিনা। আর যদি কিছু থেকে থাকে তাহলে আস্তে করে উপুর করে আঙ্গুলের সাহায্যে বের করে আনতে হবে।

ধাপ-৩ঃ ব্যক্তিকে শক্ত খাট বা টেবিল বা মাটিতে চিৎ করে এমনভাবে শুইয়ে দিতে হবে যাতে নাক সোজা আকাশের দিকে বা ছাদের দিকে থাকে। এবার যতখানি সম্ভব তার মুখ হাঁ করাতে হবে। এতে শ্বাসনালীর ভেতরে বাতাস ঢুকে সহসা শ্বাস-প্রশ্বাস শুরু হয়ে যেতে পারে।

ধাপ-৪ঃ শ্বাস-প্রশ্বাসের লক্ষন দেখা না গেলে মুখে-মুখে শ্বসনের ব্যবস্থা নিতে হবে । এ কাজে শুরুতে গভীর শ্বাস নিতে হবে ।

একটু বয়স্ক রোগীর ক্ষেত্রে, এখাতে ওর নাক চেপে ধরে মুখের উপর মুখ স্থাপন করে সজোরে ফুঁ দিয়ে রোগীর বুক উঁচু হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। এভাবে দুবার ফুঁ দেওয়ার পরও যদি শ্বাস চালু না হয় তাহলে আবার ধাপ-২ প্রয়োগ করতে হবে।

ছোট শিশু হলে তার নাক-মুখ ঢেকে নিজের মুখে চেপে ধরতে হবে। এরপর আস্তে আস্তে ফুঁ দিতে হবে । লক্ষ রাখতে হবে যেনো ব্যক্তির বুক সামান্য ফুলে উঠে। জোরে ফুঁ দেওয়া যাবে না , তাহলে শিশুর ফুসফুস ছিড়ে যেতে পারে।

ধাপ-৫ঃ ধাপ ৪ চলাকালীন সময়ে কখনও কখনও রোগীর হৃদস্পন্দন থেকে যেতে পারে। এমন অবস্থা দুইবার ফুঁ দেওয়ার পর রোগীর নাড়ি চেপে দেখতে হবে। এক্ষেত্রে আঙ্গুলের চাপে নাড়ির স্পন্দনা একেবারেই না পাওয়া গেলে বুকের মাঝখানে চাপ দিয়ে মালিশ করতে হবে।

ধাপ-৬ঃ ঘটনাস্থলে একাধিক ব্যক্তি থাকলে একজন বুক মালিশ করবে , আরেকজন মুখ-মুখে শ্বাস-প্রশ্বাস চালিয়ে যেতে হবে। কম বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে তিন আঙ্গুল দিয়ে নাভীর ঠিক নিচে মালিশ করতে হবে । ঘরে আর কেউ না থাকলে একবার মুখ-মুখে শ্বাস দিয়ে ৫ বার মালিশ করতে হবে। আরেকটু বেশি বয়স্ক শিশুর ক্ষেত্রে বেশি চাপের প্রয়োজন হতে পারে, তখন হাতের ঘোরার তালু ব্যবহার করা যেতে পারে। মালিশের সময় বুক প্রায় দেড় ইঞ্চি পর্যন্ত চেপে নিতে নামিয়ে দিতে হতে পারে। নাড়ির স্পন্দন না পাওয়া পর্যন্ত কিংবা মৃত্যু নিশ্চিত না জানা পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে।

ধাপ৭ঃ এক্ষেত্রে এম্বুলেন্স এসে গেলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

আশা করি, প্রক্রিয়াটি জেনে রাখলে আপনাদের উপকার হতে পারে। এবং একটি জীবনও বেচে যেতে পারে। তাই মনযোগ দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। নিত্যনতুন হেলথ এবং ইন্টারনেট সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথে থাকার অনুরোধ রইলো।

Blogger and SEO Expert. Founder of Techbdtricks. I always try to explore something new and let the people know about that. Keep me in your prayers.

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.