ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে করণীয় কি?

নতুন ভোটার নিবন্ধন তথা জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করলে কিছুদিন পর বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করতে হয়। সে সময় নির্বাচন কমিশন থেকে একটি ভোটার স্লিপ দেওয়া হয় যা পরবর্তীতে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে প্রয়োজন হয়। কি হবে যদি এই ভোটার স্লিপ হারিয়ে যায়? চলুন ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে করণীয় কি তা জেনে নেওয়া যাক।

জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য ফ্রিঙ্গারপ্রিন্ট এবং চোখের রেটিনার ছাপ দিয়ে আসার পর যে ভোটার স্লিপটি আমাদের দেওয়া হয় সেটাতে ভোটার এলাকার নম্বর, ফরম নম্বর, নাম, নিবন্ধন কেন্দ্র, উপস্থিতির তারিখ, এবং তথ্য সংগ্রহকারীর স্বাক্ষর দেওয়া থাকে।

এই স্লিপটি প্রদানের সময় কতৃপক্ষ থেকে এটি সংরক্ষনের জন্য বলা হয়। কেননা যখন ভোটার আইডি কার্ড বা স্মার্টকার্ড প্রদান করা হবে তখন এই স্লিপটি জমা দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের ভোটার আইডি কার্ড বা স্মার্টকার্ড সংরক্ষন করতে হবে।

তাছাড়াও, জাতীয় পরিচয় পত্রের অনলাইন কপি পেতে গেলে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের জন্য এই ভোটার স্লিপে থাকা ফরম নাম্বার প্রয়োজন হবে। ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন না।

তো, বুঝতেই পারছেন ভোটার স্লিপ আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ন। কিন্তু অনেকেই খামখেয়ালী করে এই স্লিপটি হারিয়ে ফেলে এবং পরবর্তীতে চিন্তায় পরে যায়।

চিন্তার কোনো কারন নাই, আজকের আর্টিকাল পরে আপনি জানতে পারবেন ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে করণীয় কি এবং কি পদক্ষেপ গ্রহন করলে হারানো ভোটার স্লিপ পূনরায় ফিরিয়ে আনা যায়।

ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে করণীয়

ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে করণীয় হচ্ছে সেটার আরেকটা কপি সংগ্রহ করার জন্য আপনাকে নির্বাচন কমিশনে যোগাযোগ করতে হবে।

আপনার ভোটার স্লিপ হারিয়ে ফেলার ঘটনাটি সেখানকার কর্মকর্তার কাছে বললে তারা আপনার ১০ আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে ভোটার স্লিপের নতুন আরেকটি কপি আপনাকে দিয়ে দিবে।

নির্বাচন অফিসে যাওয়ার সময় অবশ্যই সাথে করে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যেমন জন্ম নিবন্ধন কার্ড, পিতা-মাতার আইডি কার্ড ইত্যাদির ফটোকপি নিয়ে যাবেন।

কেননা, তারা সেখানকার কর্মকর্তারা আপনার হাতের ছাপ এবং অন্যান্য তথ্য ব্যবহার করে আপনার আবেদন ফরম খুজে বের করবে এবং আপনার নামের সাথে মিলিয়ে দেখবে সবকিছু ঠিক আছে কিনা।

সবকিছু ঠিক থাকলেই কেবল তারা আপনার ভোটার নিবন্ধন ফরম পুনঃমুদ্রন করবে। এই ক্ষেত্রে আপনার কিছু টাকা-পয়সা খরচ হবে।

আবেদন ফরম খুজে না পাওয়া গেলে করনীয় কি?

যদি নির্বাচন কমিশনে থাকা সমস্ত আবেদন ফরম খুজে আপনার নাম পাওয়া না যায় তাহলে আপনার নির্বাচনী এলাকার ভোটার তালিকায় আপনার নাম খুঁজতে হবে এবং উক্ত তালিকা থেকে ভোটার নাম্বারটি সংগ্রহ করতে হবে।

নির্বাচনের আগ মূহুর্তে নির্বাচন প্রতিনিধিদের কাছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। তখন সে তালিকা থেকে আপনার নাম খুজে বের করে এবং ভোটার নাম্বার সংগ্রহ করে সরাসরি নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

ভোটার স্লিপ ছাড়া আইডি কার্ড বের করার উপায়

ভোটার স্লিপ ছাড়াও আপনি অনলাইন থেকে আইডি কার্ড বের করতে পারবেন তবে স্মার্টকার্ডের জন্য অবশ্যই স্লিপ দরকার হবে।

এখন কথা হচ্ছে ভোটার স্লিপ ছাড়া কিভাবে আইডি কার্ড বের করা যায়?

এর জন্য আপনাকে ভোটার স্লিপে থাকা ফরম নাম্বারটি অথবা এনআইডি নাম্বার এবং আপনার জন্ম তারিখ জানা থাকতে হবে।

এখন যেহেতু আপনার ভোটার স্লিপ নেই তাই ভোটার ফরম নাম্বার জানতে পারছেন না সেহেতু NID Number দিয়ে দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন কপি বের করতে হবে।

NID Number জানার উপায় কি?

আমরা জেনেছি ফরম নাম্বার অথবা এনআইডি নাম্বার হলে ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করা যায়। কিন্তু হতে পারে আপনি ফরম নাম্বার এবং NID Number কোনোটাই জানেন না।

তাহলে উপায়?

হ্যা, এনআইডি নাম্বার জানার উপায় একটা আছে আর সেটা হলো SMS পড়ার মাধ্যমে।

জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করলে যখন সেটা অনলাইনে চলে আসে তখন নির্বাচন কমিশন ১০৫ নাম্বার থেকে আইডি কার্ডের নাম্বার প্রেরন করে।

১০৫ থেকে প্রাপ্ত এসএমএস এর মাধ্যমে আপনি ১০ ডিজিটের স্মার্ট আইডি কার্ডের নাম্বার জেনে থাকবেন এবং সেটি ব্যবহার করে খুজ সহজেই অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করে পারবেন।

আপনার এনআইডি নাম্বার এসএমএস থেকে জানার জন্য এখনই আপনার ম্যাসেজ চেক করে দেখুন। ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম

আইডি কার্ডের অনলাইন কপি বের করার উপায়

অনলাইন থেকে আইডি কার্ডের কপি ডাউনলোড করার জন্য প্রথমে যেতে হবে এই ওয়েবসাইটে – services.nidw.gov.bd । এই ওয়েবসাইটে NID BD এর সকল সেবা পাওয়া যায়।
তারপর এনআইডি নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দিয়ে এখানে একটি একাউন্ট খুলতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনার স্থায়ি ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন এবং NID Wallet এপস এর মাধ্যমে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ন করতে হবে।

তারপর প্রোফাইলে ডুকলেই সবার নিচের মেনুটে ডাউনলোড নামক একটি অপশন পেয়ে যাবেন। ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে আইডি কার্ডের পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন।

সেই পিডিএফ ফাইল যেকোনো কম্পিউটারের দোকান থেকে ২০ টাকার বিনিময়ে প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন।

এভাবেই আপনি স্লিপ হারিয়ে ফেললেও অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। আশা করি ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে করণীয় কাজগুলো আপনি যথাযথভাবে জানতে পেছেন।

সার-সংক্ষেপ

তাহলে আমরা জানলাম ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলেও অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু যদি স্মার্ট কার্ড পেতে চান তাহলে অবশ্যই ভোটার স্লিপ দরকার হবে।

আর ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে করণীয় কি এবং কিভাবে সেটি ফেরত আনা যায় সে বিষয়েও আমরা ইতোমধ্যে জেনে গেছি। এখন এই বিষয়ে অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে আপনি নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

Avatar of Shakib Hasan

Blogger and SEO Expert. Founder of Techbdtricks. I always try to explore something new and let the people know about that. Keep me in your prayers.

Leave a Comment