প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, নমুনা, ও উদাহরণ

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানতে চান? প্রতিবেদন লেখার নিয়ম যদিও স্কুলের পাঠ্যবইতে শেখানো হয়, তারপরও অনেকেই সময়ের সাথে সাথে তা ভুলে যায় আর গুগলের দারস্থ হয় প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানতে। আপনি যদি তেমনি কেউ হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকেই বলছি! আমাদের আজকের আয়োজন আপনার জন্যই। দু’মিনিট সময় নিয়ে বসে পড়ুন আর জেনে নিন প্রতিবেদন লেখার যাবতীয় নিয়ম। 

আমাদের আজকের ব্লগ পোস্টে আমরা আপনাদের জানাবো প্রতিবেদন সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য। যেসব বিষয় থাকবে আজকের আয়োজনে তার একটা তালিকা চলুন দেখে নেয়া যায়:

  • প্রতিবেদন কি
  • প্রতিবেদনের প্রকারভেদ
  • প্রতিবেদন লেখার নিয়ম বা কৌশল
  • কোন প্রতিবেদন কিভাবে লিখতে হয়
  • প্রতিবেদন কারা লিখে
  • প্রতিবেদন লেখার নিয়ম নিয়ে শেষকথা

প্রতিবেদন কি?

কোনো বিশেষ ঘটনা বা বিষয়ের উপর যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য সম্বলিত বিবরণীকে প্রতিবেদন বলা হয়। যিনি প্রতিবেদন রচনা করেন তিনি হলেন প্রতিবেদক। প্রতিবেদন রচনার ইংরেজি প্রতিশব্দ Report Writing. ইংরেজি এবং বাংলা প্রতিবেদন লেখার নিয়ম প্রায় একইরকম।

প্রতিবেদন তৈরী করার সময় প্রতিবেদককে সত্যনিষ্ঠভাবে ঘটনার যাবতীয় তথ্যাদি সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে উপস্থাপন করতে হয়। সংবাদপত্রের জন্য যেসব প্রতিবেদন তৈরী করা হয় তা স্বভাবতই সুনির্দিষ্ট প্রতিবেদন লেখার নিয়ম অনুসরণ করেই লেখা হয়।  এতে করে পাঠকগণের কাছে প্রতিবেদন টি সহজবোধ্য হয়। 

প্রতিবেদনের প্রকারভেদ:

দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া নানাবিধ ঘটনা নিয়েই সাধারণত প্রতিবেদন লেখা হয়। প্রতিবেদনে যেহেতু সব ধরনের বিষয়বস্তুই স্থান করে নেয় তাই এই ঘটনা বা বিষয়বস্তুর আলোকে প্রতিবেদনের প্রকারভেদও হয় ভিন্ন ভিন্ন। চলুন, দেখে নিই প্রতিবেদনের কিছু ধরন এবং জেনে নিই এই সংক্রান্ত কিছু তথ্য:

  • প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন: কোনো প্রতিষ্ঠানের মাসিক, পাক্ষিক, দ্বি-মাসিক, ত্রৈমাসিক, ষান্মাসিক কিংবা বার্ষিক বিভিন্ন পরিকল্পনা, অর্জন, আয়-ব্যয়ের হিসাব ইত্যাদি নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে এই প্রতিবেদন রচনা করা হয়ে থাকে। একটি প্রতিষ্ঠান সময়ের সাথে সাথে কত দ্রুত বা ধীর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তা এই প্রতিবেদনে থাকে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লিখার নিয়ম সাদামাটা ধরনের। এখানে খুবই সাধারণ ভাষায় এবং স্বল্প কথায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যাবলীর বিবরণ দিতে হবে।
  • অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন: অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন মূলত যেকোনো ধরনের প্রতিবেদনের খসড়া বা ড্রাফট। এই ধরনের প্রতিবেদনকে বারবার সম্পাদনা করে পাঠক উপযোগী করে তোলা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে এই প্রতিবেদন প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন থেকে ছোটো বা বড়ও হতে পারে।
  • সংবাদপত্রের প্রতিবেদন: প্রতিবেদন বা রিপোর্ট বলতে সাধারণত সবাই এই সংবাদপত্রের প্রতিবেদনকেই বুঝে থাকে৷ সংবাদপত্রের প্রতিবেদন লিখার নিয়ম বরারবই সুনির্দিষ্ট। এসব নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে সংবাদপত্রে সেই প্রতিবেদন ছাপা হয় না। আবার কখনো ছাপা হলে সেই প্রতিবেদনের জন্য জনরোষের শিকার হতে হয়। সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদককে তাই রচনা করতে হয় সত্য ঘটনার নির্ভুল তথ্যের সমাহারে প্রাঞ্জল বিবরণী।
  • দাপ্তরিক প্রতিবেদন: কোনো ঘটনা সরেজমিন প্রত্যক্ষ করে, যাচাই-বাছাই শেষে যে তথ্য উপাত্তের যে বিবরণী তৈরী করা হয় তাকেই দাপ্তরিক প্রতিবেদন বলা হয়।
  • তদন্ত প্রতিবেদন: সচরাচর যে ধরনের প্রতিবেদন তৈরী করা হয় তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এই তদন্ত প্রতিবেদন। কোনো ঘটনার সত্যানুসত্য যাচাই করে, সব ধরনের পক্ষপাতিত্বের উর্ধ্বে উঠে এই ধরনের প্রতিবেদন তৈরী করতে হয়। তদন্ত প্রতিবেদন তৈরীর সময় প্রতিবেদকের বুদ্ধিমত্তার সাথে কাজে লাগাতে হয় নিজের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়কেও।
  • গবেষণামূলক প্রতিবেদন: কোনো একটি বিষয়, সেটা হতে পারে দেশের আভ্যন্তরীন বা দেশের বাইরের, সে বিষয়ের উপর বস্তুনিষ্ঠ গবেষণা পূর্বক সব ধরনের তথ্য উপাত্ত দিয়ে যে প্রতিবেদন তৈরা করা হয়ে থাকে তাই গবেষণামূলক প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের নিজস্ব মতামতের চাইতে যে বিষয়ের গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হচ্ছে তাকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়।
  • নিয়মিত প্রতিবেদন: একটা নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে যে প্রতিবেদন তৈরী করা হয় তাকে নিয়মিত প্রতিবেদন বলে। যেমন : দৈনিক, সাপ্তাহিক,পাক্ষিক, মাসিক, দ্বিমাসিক, ত্রৈমাসিক, ষান্মাসিক, বার্ষিক ইত্যাদি। এইসব রিপোর্ট বা প্রতিবেদনে ঐ নির্দিষ্ট সময়ের সকল তথ্য এক নজরে পাওয়া যায়।
  • ঘোষণা প্রতিবেদন: কোনো বিশেষ ঘোষনা, চাকরির সার্কুলার, সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া কোনো বিশেষ বিজ্ঞপ্তি, কিংবা কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নতুন পণ্য আনয়ন, মূল্যছাড় সম্পর্কিত ঘোষণা নিয়ে যে প্রতিবেদন লিখা হয় তাকেই ঘোষণা প্রতিবেদন বলে। এই প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো লেখা থাকে না বললেই চলে।
  • বিশেষ প্রতিবেদন: কোনো বিশেষ ঘটনা নিয়ে যে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন রচনা করা হয় তাই মূলত বিশেষ প্রতিবেদন। কোনো বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানের রজতজয়ন্তী বা সূবর্ণজয়ন্তী বা কোনো প্রতিষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন কিংবা কারো বিদায়ে এই প্রতিবেদন রচনা করা হয়। এতে প্রতিবেদককে নিজের দক্ষতার পরিপূর্ণ প্রয়োগ ঘটিয়ে বিষয়টি খুব সুন্দর ও সাবলীলভাবে উপস্থাপন করতে হয়। 
  • রাজনৈতিক প্রতিবেদন: রাজনৈতিক কোনো বিষয় নিয়ে যে প্রতিবেদন রচনা করা হয় তাই রাজনৈতিক প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনে সাধারণত সরকারী ও বিরোধী দল উভয়ের কথাই থাকে। এক্ষেত্রে প্রতিবেদককে নিরপেক্ষতার নীতি প্রদর্শন করতে হয়।
  • ক্রীড়া প্রতিবেদন: খেলাধুলা নিয়ে যে প্রতিবেদন তৈরী করা হয় তাই ক্রীড়া প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনে সাধারণত দেশ ও দেশের বাইরের সব ধরনের খেলার খবরের সমাহার থাকে।
  • সাংস্কৃতিক প্রতিবেদন: দেশের ও দেশের বাইরের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং এদের ঘরানার সব ধরনের তথ্যের সমাহারে তৈরী হয় এই সাংস্কৃতিক প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদন থেকে এই অঙ্গনের যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য পাওয়া যায়।
  • সাক্ষাৎকার ভিত্তিক প্রতিবেদন: বিশেষ ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরী হয়। দেশের সাংস্কৃতিক জগৎ, ক্রীড়া জগৎ কিংবা রাজনৈতিক জগতের ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার এই প্রতিবেদনে লিপিবদ্ধ করা হয়।
  • প্রস্তাবনা প্রতিবেদন: কোনো উদ্যোগ গ্রহণ বা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কোনো প্রকল্প শুরু করার আগে এই ধরনের প্রতিবেদন তৈরী করা হয়। এতে উদ্দিষ্ট উদ্যোগের পক্ষে এবং বিপক্ষে সব ধরনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন পূর্বক তথ্যমালা সন্নিবেশিত হয়। প্রস্তাবনা প্রতিবেদনকে পর্যালোচনা প্রতিবেদনও বলা হয়ে থাকে।

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম বা কৌশল :

সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে প্রতিবেদন লিখতে হয়। নির্দিষ্ট কাঠামো অনুসরণ করে প্রতিবেদন রচনা করলে তা পাঠকদের কাছে যেমন সহজবোধ্য হয় তেমনি দেখতেও নান্দনিক লাগে। প্রতিবেদন রচনার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হয় তা হলো:

  • নির্দিষ্ট কাঠামো অনুসরণ। 
  • নিরপেক্ষ নীতি বজায় রাখা।
  • অহেতুক-বাড়তি, অপ্রয়োজনীয় কথা পরিহার করা।
  • কোনো ঘটনা যেভাবে ঘটেছে অনুরূপ ভাবেই বর্ণনা করা।
  • ঘটনার যুক্তিবহ উপস্থাপনা।

 এইসব বিষয় সামনে রেখে যখন প্রতিবেদন রচনা করা হয়, তখনই একটি মানসম্পন্ন, পাঠকনন্দিত প্রতিবেদন তৈরী হয়।

কোন প্রতিবেদন কিভাবে লিখবেন:

এতক্ষণ তো অনেক জানলেন প্রতিবেদন কি, প্রতিবেদনের প্রকারভেদ এবং প্রতিবেদন লেখার মূল মূল কিছু নিয়ম সম্পর্কে। এই নিয়ম সব প্রতিবেদনের জন্য প্রযোজ্য হলেও প্রতিবেদনকে আরো সুন্দর ও মানসম্মত করতে প্রতিবেদন ভেদে বদলে যায়, নতুন করে যুক্ত হয় আরো কিছু নিয়ম, নীতিমালা। যেসবের অনুপস্থিতি কখনো কখনো প্রতিবেদনকে পড়ার অনুপযোগী করে তোলে। এখন আমরা আপনাদের জানিয়ে দিবো কিছু বিশেষ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও কাঠামো সম্পর্কে। প্রতিবেদন লিখার জন্য যে  সুনির্দিষ্ট কাঠামো অনুসৃত হয় তা হলো:

  • প্রতিবেদকের স্বাক্ষর
  • প্রতিবেদনের বিষয়
  • প্রতিবেদনের সময়
  • প্রতিবেদনের তারিখ
  • প্রতিবেদনের স্থান
  • প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা।

আপনি যে ধরনের প্রতিবেদন লিখেন না কেন – সব ধরনের প্রতিবেদনেই এই তথ্যগুলো বাধ্যতামূলক ভাবে দিতে হবে। অন্যথায় আপনার লেখা প্রতিবেদনটি পাঠক সমাজের কাছে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলবে। আপনি নিশ্চয়ই তেমনটা চান না!

প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লিখার নিয়ম:

প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত নিয়ম কাঠামো অনুসরণ করতে হবে:

তারিখঃ

বরাবর,

যার কাছে প্রতিবেদন পেশ করবেন তার পদবি।

প্রতিষ্ঠানের নাম,

প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা।

বিষয়ঃ

স্মারক/সূত্রঃ

(বিস্তারিত: এখানে সাধারণ দরখাস্তের মতো দরখাস্ত পেশ করে বলবেন যে আপনি প্রতিবেদনটি পেশ করতে চলেছেন।)

প্রতিবেদনের শিরোনাম: শিরোনাম পৃষ্ঠার একদম মাঝখানে হতে হবে। শিরোনাম হতে হবে নজরকাড়া। যাতে পাঠক দেখা মাত্র পড়তে আগ্রহী হয়।

(বিবরণ: অল্প কথায় সম্পূর্ণ ঘটনা বিবৃত করতে হবে। অহেতুক, অপ্রয়োজনীয় তথ্য দেয়া যাবে না।)

মতামতঃ

প্রতিবেদকের স্বাক্ষরঃ

প্রতিবেদনের বিষয়ঃ

প্রতিবেদনের সময়ঃ

প্রতিবেদনের তারিখঃ

প্রতিবেদনের স্থানঃ

প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানাঃ

এসব কাঠামো অনুসরণ করে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লিখতে হয়।

সংবাদ পত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন লেখার নিয়ম:

সাধারণভাবে, প্রতিবেদন বলতে সংবাদপত্রের প্রতিবেদনই বুঝানো হয়। এই প্রতিবেদন লেখার নিয়ম একেবারেই আলাদা ধরনের। প্রকৃত ঘটনাটি কোনো ধরনের বিকৃতি ব্যতিত একদম নিরপেক্ষ ভাবে বর্ণনা করা এই প্রতিবেদনের লক্ষ্য। এজন্য একটি নজর কাড়া শিরোনামের প্রয়োজন যাতে শিরোনাম দেখেই পাঠক প্রতিবেদনটি পড়ার জন্য আগ্রহী হন। তবে নজর কাড়তে গিয়ে এমন আজগুবি শিরোনাম ও দেয়া যাবে না, যে প্রতিবেদন আর শিরোনামে কোনোই মিল নেই। সংবাদপত্রের প্রতিবেদন লিখার নিয়ম সাধারণত নিম্নোক্ত কাঠামো অনুসৃত করে লিখা হয়:

শিরোনাম: সুন্দর, অর্থবহ, নজরকাড়া হতে হবে।

ভূমিকা: অল্প কথায় পুরো প্রতিবেদনের প্রতিভূ এই অংশে ফুটিয়ে তুলতে হবে।

সূত্র: যে বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরী করছপন, সেটার বিশ্বস্ত সূত্র সংযুক্ত করতে হবে।

সরাসরি নাম উল্লেখ করা যাবে না: অর্থাৎ, সরেজমিন প্রত্যক্ষ করতে গিয়ে যাদের সাথে কথা হয়েছে, তাদের নাম না বলে পদবি উল্লেখ করতে হবে।

আনুষঙ্গিক আলোচনা: এই আলোচনা যত ছোটো করা যায় ততই মঙ্গল। বেশি বড় হলে আপনি যত ভালো প্রতিবেদনই লিখেন না কেনো পাঠকের মনযোগ ধরে রাখতে পারবেন না। আবার ছোটো করতে গিয়ে খাপছাড়া না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখবেন।

এই বিষয় গুলো যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করতে পারলেই আপনি খুব সুন্দর একটি সংবাদপত্রে উপযোগী প্রতিবেদন তৈরী করতে পারবেন।

তদন্ত প্রতিবেদন লিখার নিয়ম বা কৌশল:

এই ধরনের প্রতিবেদন লেখার নিয়ম অনেকটা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়মের মতো। তবে সংবাদ পত্রের প্রতিবেদনের সাথে মিল নেই বললেই চলে। বলুন তো এই পার্থক্যের কি কারণ? এর একটা বড় কারণ হলো তদন্ত প্রতিবেদনে আপনার অর্থাৎ প্রতিবেদকের নিজস্বতা প্রতিবেদনে ফুটে ওঠে।

একজন প্রতিবেদক ঘটনার আদ্যোপান্ত যাচাই করে সত্যটা উদঘাটন করার চেষ্টা করে এবং নিজস্ব কিছু মতামতও প্রকাশ করে থাকে এই তদন্ত প্রতিবেদনে।

তবে এই প্রতিবেদনেও প্রতিবেদনের সুনির্ধারিত কাঠামো অনুসৃত হয়ে থাকে যা পূর্বেই উল্লেখ করেছি।

নান্দনিক প্রতিবেদন লিখার নিয়ম:

একটি সুন্দর প্রতিবেদন লিখতে হলে সাধারণত কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হয়। এই বিষয়গুলো হলো:

  • সুনির্দিষ্ট কাঠামোর পরিপূর্ণ অনুসরণ।
  • নান্দনিক উপস্থাপন শৈলী।
  • ঘটনার পূর্ণ বিবরণী।
  • নিরপেক্ষতা বজায় রাখা।
  • সহজবোধ্য, প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা।
  • সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা।
  • সুস্পষ্ট বর্ণনা দেয়া
  • নির্ভুল তথ্যের উপস্থাপন।
  • পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখতে হবে।
  • ভাষার অপপ্রয়োগ এবং ব্যকরণগত ভুল করা যাবে না।
  • প্রয়োজনে সুপারিশ সংযুক্ত করতে হবে।
  • ঘটনার তথ্যসূত্র উল্লেখ করে দিতে হবে।

এই সব বিষয় ঠিকঠাক ভাবে অনুসরণ করলেই আপনি চমৎকার একটি প্রতিবেদন তৈরী করে ফেলতে পারবেন।

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম নিয়ে আমাদের শেষকথা:

প্রতিবেদন কি, প্রতিবেদন কত প্রকার, কোন ধরনের প্রতিবেদন কিভাবে লিখতে হয় এবং একটি নান্দনিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সবই তো জানা হলো! কি বিষয়টা খুব হিজিবিজি মনে হচ্ছে? 

প্রথম দিকে হয়তো একটু ঝামেলার মনে হতে পারে। তবে চর্চা করলেই আপনি নান্দনিক একটা প্রতিবেদন রচনা করতে পারবেন।

আজকের ব্লগ পোস্টে বর্ণিত প্রতিবেদন লেখার নিয়ম গুলো যদি সুন্দরভাবে আপনার প্রতিবেদনে প্রতিফলিত করতে পারেন তবে পাঠক সমাজে দারুণ সাড়া পাবেন এ বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারেন।

Avatar of Shakib Hasan

Blogger and SEO Expert. Founder of Techbdtricks. I always try to explore something new and let the people know about that. Keep me in your prayers.

Leave a Comment