সুস্থ থাকার উপায়-সুস্থাস্থের জন্য আপনার এগুলো জানা খুবই প্রয়োজন

শরীর ভালো না থাকলে মন ভালো থাকেনা। আর মন ভাল না থাকলে সুখের দেখা মিলে না। শরীরের সঙ্গে মনের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য রাখতে আপনাকে কিছু কিছু নিয়মের মধ্যে থাকতে হবে। এসব নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে আপনি, আপনার মন ও স্বাস্থ ভালো থাকলে বলে আশা করা যায়।তো দেরী না করে চলুন জেনে নিই স্বাস্থ্য ভালো রাখার কয়েকটি সহজ দিক

১ঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান

আমরা সকলেই জানি, বেচে থাকার জন্য ঘুম অত্যাবশ্যকীয় একটি জিনিস। না ঘুমালে আমরা কেউই ঠিক থাকতে পারতাম না। ঘুম শারীরিক এবং মানষিক প্রশান্তি জোগায়। তাছাড়াও সারাদিন ব্যস্ততায় সময় কাটানোর পর আমাদের শরীরের বিশ্রামের জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজন।

একজন পরিনত বয়সের মানুষের দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার। একটানা অনেক সময় যদি কেউ না ঘুমায় তাহলে তার শরীরে অনেক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। তাই আমাদের নিয়মিত ঘুমাতে হবে, যদি আমরা সুস্থ থাকতে চাই।

২ঃ প্রতিদিন ব্যায়াম করুন

সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন ব্যায়াম করার গুরুত্ব অপরিসিম। ব্যায়াম বয়স ও সময় ভেদে ভিন্ন হতে পারে। যেমনঃ

৫০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি এবং শিশু ব্যক্তি প্রতিদিন ৩০ মিনিট সকালে হাটতে পারেন। যুবক বয়সী ব্যক্তি সব ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে সময়ের দিকে ও খেয়াল রাখতে হবে। খাবার পরপরই ব্যায়াম করা উচিত হয়। এতে অনেক সময় মৃত্যু ও হতে পারে।

ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকাল বেলা

৩ঃ প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিন্নতা

সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন খাবারের তালিকায় বিভিন্ন রকম ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রোটিনের যুক্ত খাবার রাখুন এবং এক খাদ্য প্রতিদিন খাবেন না।

মনে করুন, আপনার আজকের খাবারের তালিকায় ছিল ডিম, দুধ এবং বিভিন্ন প্রোটিন। কিন্তু কালকে আপনি অন্য কিছু রাখতে পারেন। যেমন বিভিন্ন শাঁক-সবজি, মাছ এবং ভাত।

এভাবে করে একটি সপ্তাহিক রুটিন বানিয়ে নিন। খাবারের পরিমাণ থেকে গুণগত মানের দিকে লক্ষ্য রাখুন।

৪ঃ খাদ্যতালিকায় শর্করাযুক্ত খাবার রাখুন

মানুষের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য প্রয়োজন শর্করা বা গ্লুকোজ । আর বিভিন্ন ফল, মিষ্টি আলু, শস্যদানা সহ অনেক উপাদানেই এই শর্করা থাকে।

শস্যদানায় পেতে পারেন আয়রন, থিয়ামিন, নিয়াসিন, ভিটামিন বি’ এবং আরো অনেক উপকারী উপাদান। যা আপনার প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে বেশি শক্তি বৃদ্ধি করে। এতে থাকা ভিটামিন এ ও সেলেনিয়াম শরীরে ভাইবার এর মাত্রা বৃদ্ধি করে। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, সেইসঙ্গে পেটের রোগের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে। সুস্থ এবং ফিট থাকার সহজ কিছু উপায়

৫ঃ পরিমানমতো প্রোটিন খান

প্রোটিন বা আমিষ আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। দেহের তাপ সমতা, পুষ্টি সংগ্রহ এবং রোগ প্রতিরোধে প্রোটিনের ব্যবহার ব্যাপক। কিন্তু, আমাদের পরিমানমতো প্রোটিন খেতে হবে। কারন প্রোটিন শরীরের ওজন বাড়িয়ে দেয়। আর শরীরের ওজন বেড়ে গেলে সুস্থ থাকা একটু কঠিন হয়ে যায়

৬ঃ প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখুন

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখুন। যেমনঃ মৌসুমি ফল, সিম, মটরশুঁটি, বরবটির মতো আঁশযুক্ত সবজি। যেগুলো সুগার নিয়ন্ত্রণে যেমন সাহায্য করে তেমনি হূদরোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যারা ফলমূল এবং শাকসবজি বেশি বেশি খায় তাদের হাপানি সহ বিভিন্ন এলার্জিজনিত রোগের ঝুঁকি অত্যন্ত কম থাকে। বাধাকপি ও ফুলকপি সহ সকল সবজি জাতীয় খাবার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

৭ঃ প্রতিদিন অল্প পরিমাণে বাদাম

সুস্থ থাকতে এবং সুস্বাস্থের অধিকারী হতে আপনার খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন অল্প পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের বাদাম রাখতে পারেন। যেমনঃচিনা বাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম, প্রভৃতি।

বাদামে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, হলি ক্যাসেট, সহ- প্রচুর উপকারী উপাদান রয়েছে। নিয়মিত এবং পরিমিত পরিমাণে বাদাম খেলে হার্ট ভালো থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত জীম করে তারা তাদের প্রতিদিন খাবার তালিকায় বাদাম রাখে।

সুস্থ এবং ফিট থাকতে বাদাম খাওয়ার এই উপায় টি আপনার সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।

৮ঃ অতিমাত্রায় চা কফি খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন

চা অথবা কফি আমাদের জন্য উপকারী এক্তি খাবার। এটি আমাদের শরীরের ক্লান্ত ভাব দূর করে এবং শরীরে এনার্জী আনে। কিন্তু এটি অতিরিক্ত গ্রহনের ফলে স্বাস্থের ক্ষতি হতে পারে।

তাই অতিমাত্রায় চা কফি খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। তার পরিবর্তে বেশি বেশি টাটকা ফলের রস খান এবং শরীরের নিয়মিত যত্ন নিন। রাতে তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়া উচিত এবং খাওয়ার কমপক্ষে দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর ঘুমানো সবথেকে ভালো আপনার সাস্থের জন্য।



৯ঃ প্রতিদিন খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠে দুই অথবা তিন কি.মি. হাঁটুন।

সকালে হাটা যে আমাদের শরীরের পক্ষে কতটা ভালো তা লিখে বুঝানো সম্ভব নয়। আমরা অনেকে আছি যারা হয়তো সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারিনা। আর এই জন্য আমাদের নানা রোগ ও অসুস্থতার সাথে জীবন কাটাতে হয়।

যিনি সুস্থ এবং ফিট থাকতে চান, তাকে অবশ্যই সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে এবং অন্তত ২-৩ কিলোমিটার হাটতে হবে। আর যদি সম্ভব হয় তাহলে হালকা শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে।


১০ঃ যখনই খাবার খাবেন তখন ভালো করে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন।

খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়ার কথা আমাদের ইসলাম ধর্মেও আছে।

খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে হজম ভালো হয়। তাই, এতে পেট ফোলা, গ্যাস ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

তাছাড়া খাবার ভালো করে চিবিয়ে খেলে এটি ভালো ভালো ভাঙ্গে। ফলে,খাবার হজম সহজ হয় এবং খাবারের পুষ্টিগুলোকে দেহ ভালোভাবে শোষণ করতে পারে।

তাছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার ভালোভাবে চিভিয়ে খেলে ওজন কমে খাওয়ার স্বাদ ও গন্ধ সুন্দরভাবে অনুভব করা যায়।

তাই, যখনই খাবার খাবেন তখন ভালো করে চিবিয়ে খাওয়ার চেষ্ঠা করুন।

শেষ কথা

আশা করি, সুস্থ এবং ফিট থাকার সহজ এই উপায়গুলো আপনাদের কাজে লাগবে ।যদি আরো কিছু জানার প্রয়োজন হয় তবে নিচে কমেন্ট করতে পারেন।
তাছাড়া আপনার যেকোনো মতামত আমাদের ফেসবুকে জানাতে পারেন।

Blogger and SEO Expert. Founder of Techbdtricks. I always try to explore something new and let the people know about that. Keep me in your prayers.

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.