মাসে ১০ হাজার টাকা আয় করার উপায় – সহজ ও শিউর ইনকাম

স্টুডেন্ট লাইফে কারো হাতেই তেমন টাকা থাকে না। আবার অনেকে বাসায় টাকা চাইতে অস্বস্তি বোধ করেন। কিন্তু আপনি যদি মাসে দশ হাজার টাকা আয় করতে পারেন তাহলে আপনার যেমন বাসার মুখাপেক্ষী থাকতে হবে না তেমনি কিছু টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন নিজেও। আজকের এই ব্লগ পোস্টে আমরা আপনাদের মাসে ১০ হাজার টাকা আয় করার উপায় জানিয়ে দিবো যেগুলো আপনি পার্ট টাইম জব হিসেবে করতে পারবেন। এই উপায়গুলো অনুসরণ করে শুরুতেই আপনি আপনি প্রতি মাসে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। 

আমরা আজকে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো তার যেকোনো একটি বা একাধিকটিও আপনি একইসাথে করতে পারেন, তবে শুরুটা করতে হবে যেকোনো একটি দিয়ে তারপর যখন হাতে টাকা আসতে শুরু করবে তখব এমনিই আপনার পরিধি বিস্তৃত হবে। তো চলুন! কথা না বাড়িয়ে চলে যাই মূল আলোচনায়।

প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা আয় করার ১০ টি উপায়

প্রতি মাসে অনেক উপায়েই ১০ হাজার টাকা আপনি আয় করতে পারবেন। কিন্তু এখানে সবচেয়ে সহজ এবং আনকম ১০ টি উপায় নিয়ে কথা বলবো। যার প্রথমে থাকবে ব্লগিং এবং সর্বশেষে থাকবে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করে মাসিক দশ হাজার টাকা ইনকামের উপায়।

১। ব্লগিং: 

বর্তমানে ব্লগিং করে ইনকাম করা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মাসে দশ হাজার টাকা আয় করার মাধ্যম হিসেবে আপনি ব্লগিং কে বেছে নিতেই পারেন। হয়তো প্রথম দিকে কিছু কম আয় হবে। তবে, এই কাজে লেগে থাকলে এই সেক্টর আপনাকে লাখপতিও বানাতে পারে, জেনে রাখুন! 

ব্লগিং সেক্টরে ভালো করতে হলে আপনাকে আগে বুঝতে হবে, মানুষের আকর্ষণ কোন দিকে বেশি। সেই সেক্টর গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে ব্লগ পোস্ট সাজাতে হবে।

উদাহরণ হিসেবে আমাদের এই আর্টিকেলের কথাই ধরুন! আপনি নিশ্চয়ই মাসে দশ হাজার টাকা আয় করার উপায় খুঁজছেন বলেই এই আর্টিকেলটি সার্চ করেছেন,তাই না! তো, এরকম গরম গরম টপিক নিয়ে, সঠিক তথ্যবহুল ব্লগ পোস্ট লিখলেই এই সেক্টরে ভালো আয়ের সুযোগ পাবেন।

২। ভিডিও এডিটিং:

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে সবার হাতেই এখন স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ট্যাব, ল্যাপটপ ইত্যাদির ছড়াছড়ি। যেকোনো বিষয় সহজে জানতে এখন মানুষ ইউটিউবে ভিডিও দেখে থাকে। আপনি যদি একজন ভালো ভিডিও এডিটর হয়ে থাকেন তাহলে ইউটিউবারদের এই ভিডিও এডিটিং এর কাজ করতে পারেন। 

ভিডিও এডিটিং ভালো হলে ইউটিউব বা ফেসবুক বা যেটাতেই হোক না কেন, ভিউ বেড়ে যায় অনেক বেশি। এতে করে তারা মনিটাইজেশনে যে টাকা পাবে সে অনুসারে আপনিও টাকা পাবেন তাদের থেকে।

এছাড়া, এই কাজে দক্ষ হওয়ার এক পর্যায়ে আপনি নিজের প্রতিষ্ঠানও দাঁড় করাতে পারবেন। তখন মাসে দশ হাজারের জায়গায় দশ লাখ টাকাও আসতে পারে। তো, এই ভিডিও এডিটিং হতে স্টুডেন্ট অবস্থায় পার্ট টাইমে মাসে দশ হাজার টাকা আয়ের ভালো সুযোগ।

মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়

৩। ব্যবসা:

ব্যবসায় লেগে থাকলে উন্নতি আসবেই। আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করতে পারেন। 

আপনি যদি বিশেষ এলাকার হয়ে থাকেন যেসব এলাকায় বিশেষ ঋতুতে বিশেষ ফল হয় যেমন: রাজশাহীর আম, পাবনা বা দিনাজপুরের লিচু, বরিশালের আমড়া বা পেয়ারা, নরসিংদীর লটকন বা কলা কিংবা পাহাড়ি এলাকার বাঁশ কোড়ল বা যেকোনো পাহাড়ি ফল বা সবজি । 

তাহলে এসবের ঋতুতে এসব গার্ডেন ফ্রেশ ফল সাপ্লাই দিতে পারেন। এতে করে এসবের মৌসুমে আপনি বেশ ভালো ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়া বছরের অন্য সময়, যখন যেটার চাহিদা সে মোতাবেক পণ্য মজুদ ও তা বিক্রয় করলে মাসে দশ হাজার টাকা আয় কোনো বিষয়ই না। 

ব্যবসা সম্পর্কে আরো পড়ুনঃ

৪। ডেলিভারি ম্যান:

কভিডের পরবর্তী সময়টায় মানুষ অনলাইন মুখী হয়ে পড়েছে ব্যাপক ভাবে। দেশে বর্তমানে অনেক গুলো হোম ডেলিভারি সার্ভিস আছে। যারা প্রতিনিয়ত প্রচুর পণ্য হোম ডেলিভার করে থাকে। 

আপনি চাইলে এই কাজটি শুরু করতে পারেন। এখন যদি ভাবতে বসেন কে কি ভাববে তাহলে কিন্তু এই সেক্টরে কাজ করে সুবিধা পাবেন না। 

কোনো কাজকে ছোটো করে না দেখে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সব কাজকেই সমান মর্যাদা দেখলে নিজের জন্যই তা সুফল বয়ে আনে। এই সেক্টরে লেগে থাকতে পারলে দশ হাজার টাকা মাসে আয় করতে পারবেন।

মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার উপায়

৫। ইউটিউবার:

বর্তমানে মানুষ যেকোনো বিষয় সহজে বুঝতে ইউটিউবের শরণাপন্ন হয়। আপনি ইউটিউবার হিসেবে পার্ট টাইম কাজ শুরু করতে পারেন।

এজন্য আপনাকে উল্টোপাল্টা ভিডিও বানালে চলবে না, বরং সঠিক তথ্য দিয়ে সুন্দর এডিটিং এর মাধ্যমে আপনার বিষয়ে সুন্দর করে উপস্থাপন করতে হবে।

হালের জনপ্রিয় বিষয়ে তথ্য বহুল ভিডিও বানাতে পারলে, ভিউ বাড়বে দ্রুতগতিতে। একই সাথে আপনার ইনকামও বৃদ্ধি পাবে। মাসে দশ হাজার টাকা আয়ের জন্য ইউটিউবিং হতে পারে বেশ ভালো একটি মাধ্যম। 

৬। অনলাইন টিচিং বা টিউশন:

আপনার যদি টিচিং প্রফেশনের প্রতি ঝোঁক থাকে তাহলে আপনি টিউশনি করাতে পারেন। বর্তমানে টিউশনে স্যালারি ভালোই পাওয়া যায়। আপনার কাছে অফলাইনে পড়ানো বিরক্তিকর লাগলে আপনি অনলাইনে টিচিং করতে পারেন। 

বিভিন্ন স্বনামধন্য কোচিং সেন্টার এখন অনলাইন টিচার খুঁজে থাকে। আপনি চমৎকার বাচনভঙ্গি এবং অসাধারণ লেকচার শিট বানিয়ে খুব ভালো ভাবে আপনার বিষয়টি উপস্থাপন করতে পারলেই এই সেক্টরে টিকে থাকতে পারবেন।

একটা পর্যায়ে নিজেই একটা কোচিং সেন্টার খুলতে পারবেন। মাসে দশ হাজার টাকা আয়ের একটি অন্যতম ভালো উপায় হলো এই অনলাইন টিচিং মাধ্যম।

মোবাইল দিয়ে অনলাইন ইনকাম করার উপায়

৭। কারিগরি কাজ:

পড়াশোনার পাশাপাশি কারিগরি প্রশিক্ষণ নিলে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পথ সুগম হয় অনেকখানি।  আপনার যে বিষয়ে বিশেষ আগ্রহ সে বিষয়েই যদি প্রশিক্ষণ নিতে পারেন তাহলে সে কাজ করে মাসে দশ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন সহজেই।

কারিগরি শিক্ষার অংশ হিসেবে আপনি সেলাই, সার্ভিসিং ইত্যাদি কাজ করতে পারেন। এসব কাজকে ছোটো করে দেখলে চলবে না মোটেই। আপনি যদি উন্নত বিশ্বের দিকে তাকান, তাহলে এসব ছোটো ছোটো কাজের উদাহরণ দেখতে পারবেন ভুঁড়ি ভুঁড়ি। 

মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায়

৮। রেঁস্তোরায় কাজ:

পড়াশোনার পাশাপাশি আপনি চাইলে রেস্তোরাঁয় কাজ করে উপার্জন করতে পারেন। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচুর রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে। আপনি যদি বাংলা এবং ইংলিশ উভয় ভাষাতেই পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে নিজ যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে রেস্তোরাঁ চাকরি নিয়ে নিতে পারেন।

মাসে দশ হাজার টাকা আয়ের এটা হতে পারে বেশ ভালো মাধ্যম।

৯। প্রুফ রিডিং:

মনে হচ্ছে সহজ কাজ তাই না! আসলে ততটাও না!  আপনি এই কাজে যোগদানের মাধ্যমে মাসে দশ হাজার টাকা আয় করতে পারেন।

বর্তমানে বিভিন্ন প্রকাশনী তাদের বই ছাপানের আগে প্রুফ রিডিং দেখার অফার দিয়ে থাকে। সে সময় তারা বেশ ভালো সম্মানি দিয়ে থাকে। আর প্রকাশনী গুলোর সারা মাস জুড়েই কোনো না কোনো বইয়ের কাজ চলতেই থাকে। তাই এই কাজে একবার সেট হয়ে গেলে আপনি মাসে বেশ ভালো পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

প্রুফ (Proofreading) রিডিং কি? প্রুফ রিডিংয়ের নিয়ম

 ১০। সেলসম্যান হিসেবে কাজ:

বাংলাদেশের বড় বড় ব্রান্ড যেমন : ইয়েলো, আড়ং, গ্রামীণ চেক, বাটা, অ্যাপেক্স, স্বপ্ন, আগোরা ইত্যাদির আউটলেটে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতে পারেন। ইদ বা পূজার সময় যখন এসব শপিং মলে উপচে পড়া ভীড় থাকে তখন এরা স্যালারিও অনেক বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া সারাবছর পার্ট টাইম জব হিসেবেও মন্দ না। 

আপনি এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করে মাসে দশ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন খুব সহজেই। 

শেষকথা:

টাকা উপার্জন করা সহজ নয়। এর জন্য যেটা লাগে তা হলো অধ্যবসায়। প্রচন্ড রকমের আত্মবিশ্বাস আর উদ্যমী হওয়া ছাড়া আপনি কোনো পার্ট টাইম জবেই টিকে থাকতে পারবেন না। তখন যেটা হবে, আপনি একটা একটা করে উপায় ধরবেন, কয়েকদিন পর হাল ছেড়ে দেবেন। এতে করে আপনার যেমন কাজের প্রতি অনীহা চলে আসবে, তেমনি টাকা আয় করাটাও অনেক কঠিন মনে হবে। আমরা আজকে মাসে দশ হাজার টাকা আয় করার দশ টি উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। এবার সিদ্ধান্ত আপনার!

মাসে ১০ হাজার টাকা আয় করার এই ১০টি উপায় থেকে আপনি টাকা উপার্জনের একটি ধারনা পেয়েছেন বলে আমি মনে করি। যদি ইনকাম রিলেটেড কোনো প্রশ্ন আপনার মনে থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে দ্বিধাবোধ করবেন না।

Avatar of Shakib Hasan

Blogger and SEO Expert. Founder of Techbdtricks. I always try to explore something new and let the people know about that. Keep me in your prayers.

Leave a Comment